এস এম আব্দুল্লাহ, স্টাফ রিপোর্টারঃ
যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ হয়েছে। বৃহষ্পতিবার রাত ১০টার সাতক্ষীরা সদর উপাজেলার ভোমরা দাসপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। জনগণ নিহতের স্বামীকে আটক করে।

মৃত গৃহবধু মেহেনাজ পারভিন (১৯) তিনি সদর উপজেলার ভোমরা দাসপাড়ার রিপন হোসেনের স্ত্রী ও দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের মুকুল হোসেনের মেয়ে।
উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের সুমন হোসেন জানান, ৩ মাস আগে তার বোন মেহেনাজের সঙ্গে সদরের ভোমরা গ্রামের দাসপাড়ার শ্রমিক রিপনের বিয়ে হয়।

বিয়ের সময় নগদ টাকা ও সোনার গহনা সহ এক লাখ টাকার যৌতুক দেওয়া হয়। রিপনের আগের স্ত্রী তালাক হয়ে যায়। রিপন ও তার বাবা মায়ের সঙ্গে আগে লক্ষীদাঁড়ি গ্রামে থাকতো। সম্প্রতি তারা ভোমরা দাসপাড়ায় ঘরসহ জমি কিনে বসবাস করে।
একইসাথে থাকতো রিপনের বোন রুপা ও তার স্বামী হযরত আলী।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মেহেনাজকে নির্যাতন করতো রিপন,তার বোন রুপা, বোনের স্বামী হযরত, শ্বশুর রবিউল, শ্বাশুড়ি খাদিজা । বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় মাকে রিপন ফোন করে জানায় যে মেয়েকে নিয়ে না গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে।

রাত ৯টার দিকে বোনকে অবারো নির্যাতনের একপর্যায়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়।

এ সময় বোনের শ্বশুর মোবাইল ফোনে ছোট মাকে খবর দিয়ে সদর হাসপাতালে যেতে বলে। রাত ১০টার দিকে তারা সদর হাসপাতালে যাওয়ার আগেই বোন মারা গেছে খবর পান। ১১টার দিকে বোনের লাশ লক্ষীদাড়িতে এনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার দিয়ে লাশ মাটি দেওয়ার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এসে রিপন ও তার পরিবারের সদস্যদের আটক করে একটি ঘরে রাখে।

রিপনের চাচা বাবলুর সহযোগিতায় ঘরের জানালা ভেঙে রিপনের পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। মৃতের নাক, কান ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল।
শুক্রবার সকালে ভোমরা দাসপাড়ার বিকাশ দাস, গোপাল দাস ও প্রতিমা রানী দাস জানান, রিপন ভোমরা বন্দরে খুচরো পেঁয়াজ বিক্রি করতো।
করোনার কারণে কাজ ছিল না তার। অভাবের তাড়নায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকতো।

এ কারণে মেহেনাজকে মারপিট করা হতো।
বৃহষ্পতিবার মেহেনাজকে নির্যাতনের একপর্যায়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা জেনেছেন।
তবে আটককৃত রিপন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে সে সাংবাদিকদের জানায়, তার স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মারা গেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, মৃতের লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে, বিষয়টা তদন্তে সাপেক্ষে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *